এসএম তাজাম্মুল,মণিরামপুর প্রতিনিধি: মনিরামপুর উপজেলার ১নং রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে রাস্তা দখল করে ইটের রাস্তা কেটে বথ বন্ধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।এদিকে রাস্তা ঘিরে রাখার চারদিন অতিবাহিত হলেও তা অপসারণ করা হয়নি। ফলে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করে রাখায় কয়েকটি পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে কওসার আলী গত রবিবার আদালতে ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দীন সহ তিনজনের নাম উল্লেখসহ একটি মামলা করেছেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আদালত সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
এদিকে ঘটনার চারদিন অতিবাহিত হলেও কোন বিচার না পেয়ে ও বংশপরম্পরায় চলিত রাস্তা আবার ফিরে পেতে বুধবার(১৯শে জুলাই)রহিতা বাজারে স্থানীয় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দীনের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করেছে ভুক্তভোগীরা সহ কয়েকটি পরিবারের লোকজন।
আদালতে দায়েরকৃত মামলা হতে জানা যায়, উপজেলার রোহিতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ১নং রহিতা ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিনের ভাই আমেরিকা প্রবাসী হারুন অর রশিদ রোহিতা বাজারের পাশে সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের ভাই মাসুদুর রহমানের কাছ থেকে ২০১৬ সালের ১৩ জুন নয় শতক জমি ক্রয় করেন। এর দুই বছর পর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে জমিদাতা মাসুদুর রহমান মারা যান। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে জমি রেজিস্ট্রির সাত বছর পর হারুন অর রশিদের ভাই ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন চলতি সপ্তাহের গত শুক্রবার দুপুরে লোকজন নিয়ে ওই জমিসহ পাশের ইটের সোলিংয়ের রাস্তাটি দখল করেন। দখলের পর ইট, কাঁটাতার ও নেট দিয়ে রাস্তার চারপাশসহ মুখ ঘিরে রাখেন। ফলে শুক্রবার থেকে পাশের কয়েকটি পরিবারের লোকজনের যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়েছে। রাস্তা ঘিরে রাখায় তারা বাড়ির মধ্যে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
গত শনিবার দুপুরে চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন উপস্থিত থেকে এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে ওই রাস্তা থেকে মাটি কাটা শুরু করেন।এক পর্যায়ে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে মাটিকাটা বন্ধ করে দেয়। তবে রাস্তাটি অবমুক্ত করা হয়নি। জমিদাতা প্রয়াত মাসুদুর রহমানের বড়ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, হাফিজ উদ্দিনের ভাইয়ের রেজিস্ট্রিকৃত নয় শতক জমির দলিলের নকশায় উল্লেখ রয়েছে দৈর্ঘ্য ৩২ ফুট এবং প্রস্থ ১২৭ ফুট। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন দৈর্ঘ্য ৩২ ফুটের পরিবর্তে ৫৪ ফুট এবং প্রস্থ ১২৭ ফুটের পরিবর্তে ৮০ ফুট দখল করায় রাস্তাটি তার জমির মধ্যে ঢুকে গেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন জানান, তার ভাইয়ের কেনা জমি (রাস্তাসহ) তিনি দখল করেছেন।
এ দিকে ভুক্তভোগী কওসার আলী, মতিয়ার রহমান, আতাউর রহমান, জাহান আলী, শামিম হোসেনসহ আশপাশের লোকজন জানান, তারা দীর্ঘ ৬৫ বছর ধরে এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে আসছিলেন। কিন্তু চেয়ারম্যান তাদের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি দখলের পর ঘিরে রাখায় তারা এখন পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়িতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে পরিত্রাণ পেতে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে কওসার আলী রোববার যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন, ফারুক হোসেন ও মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করেছেন, এবং শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান জানান, আদালতের নির্দেশনা পেয়ে সেখানে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।তিনি আরো বলেন,দুই এক দিনের মধ্যে এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে বসাবসি করে রাস্তাটি অবমুক্ত করা হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।